প্রতিনিধি : বেশ কয়েক বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের ফলে জনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অধিক মুনাফা লাভ ও ভোগবিলাসের জন্য আমরা দিনের পরদিন জীব বৈচিত্র্য নষ্ট করে চলেছি ।
এর ফলে নদী বাঁধ ও সমুদ্র বাঁধ নিয়মিত ভাঙছে। ঘুর্ণিঝড় "যশ" এর আঘাতে পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্রতীরবর্তী জেলাগুলিতে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিগত বছরের মত এবছরও কোভিড মহামারীর আতঙ্ক তার উপর যশের আঘাতে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত, অসংখ্য মানুষ কাজ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কাজলা জনকল্যাণ সমিতি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে।
এই কর্মযজ্ঞে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন জাতীয় স্তরের সংস্থা ‘অক্সফাম’। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর ১ন ব্লকের তালগাছাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের জামরা, কাইমা , জলধা, তাজপুর গ্রামের মৎস্যজীবি পরিবারগুলির মধ্যে ৩০৬ পরিবারকে রেশন সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। ৩০৬ টি পরিবারকে যে রেশন সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়েছে তারমধ্যে ছিল প্রতিটি পরিবারের জন্য ২৫ কেজি চাল, আটা ৫ কেজি, ডাল-৩ কেজি, তেল-১ লিটার, সোয়াবিন- ১ কেজি, লবন- ১ কেজি, হলুদ গুঁড়া- ২ প্যাকেট, এবং লঙ্কা গুঁড়া- ২ প্যাকেট । ৩০৬ টি পরিবারকে স্বাস্থ্য কিট তুলে দেওয়া হয় ।
এই স্বাস্থ্য কিটের সঙ্গে ছিল মাস্ক -৬টি, হ্যান্ড ওয়াশ , সাবান-৮ পিস, কাপড় কাচার সাবান- ৮টি ও স্যানিটারি ন্যাপকিন- ৬ প্যাকেট। ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি, রামনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শম্পা মহাপাত্র, কাঁথি পৌরসভার প্রশাসক সদস্য ও বিশিষ্ট সমাজসেবক সুপ্রকাশ গিরি, কাজলা জনকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন পন্ডা, সহ সভাপতি আকবর আলী খান, প্রণয় কুমার পাল, কমল দাস, প্রমুখ ।
মন্ত্রী কাজলা জনকল্যাণ সমিতি ও অক্সফাম ইন্ডিয়ার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। তিনি বলেন কাজলা জনকল্যাণ সমিতি বিগত দিনে আম্ফান ঝড়ের রামনগর ১ নং ব্লকে বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে আর এবারে বিধ্বংসী জলোচ্ছ্বাস ও ইয়াসের জন্য রামনগর-১ ব্লকে তালগাছাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত অধীনস্থ চাঁদপুর, তাজপুর, কইমা, জলধা, এইসব এলাকায় উনারা ত্রাণ দিচ্ছেন। এতদিন পর্যন্ত অনেকে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে এসেছেন কেউ রান্না করে খাইয়েছেন , কেউ খাদ্য সামগ্রী তুলে দিয়েছেন।
সবাইকে ধন্যবাদ জানান । কিন্তু কাজলা জনকল্যাণ সমিতি কে কৃতজ্ঞবোধ জানাই কারণ উনারা বিপদের সময় সবসময় পাশে থাকেন, এবারে যে জলোচ্ছ্বাস তা সম্পূর্ণ আলাদা এর প্রভাবে রামনগর ১ ব্লকে প্রচুর সমুদ্র বাঁধ ভেঙেছে ও মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক ইঞ্জিনিয়ার ও পরিবেশবিদ এসেছেন তারা চেয়েছেন সমুদ্র ধারে ম্যানগ্রোভ, কেয়া এগুলো আছে আরো বাড়াতে হবে । সমুদ্র বিজ্ঞানীরা আরো ভাবছেন কালো পাথর দিয়ে খাঁচা তৈরি করে কিভাবে সমুদ্রকে রক্ষা করা যায়। এরপর কাজলা জনকল্যাণ সমিতি কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং বলেন বিপদে-আপদে সবসময় পাশে আছেন ।
Comments