top of page

শ্রীনিবাস বারিকের জীবন অবসান

প্রতিনিধি : ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির প্রাক্তন সদস্য ও অবিভক্ত খেজুরির এবং খেজুরি-১ পঞ্চায়েত সমিতির চারবারের সভাপতি, শিক্ষক নেতা, সৎ, নিষ্ঠাবান, দরদী আজীবন কমিউনিস্ট নেতা কমরেড শ্রীনিবাস বারিকের জীবনাবসান হয় আজ তাঁর পাটনা গ্রামের নিজ বাসভবনে।

মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। ১৯৩৩ সালে খেজুরি থানার বীরবন্দর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাটনা-বীরবন্দর গ্রামের এক গরীব পরিবারে তাঁর জন্ম হয়। জীবনের প্রথম থেকেই দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে তিনি মানুষ হয়েছেন। পরাধীন দেশে শাসকের অত্যাচার, মানুষের দুর্ভিক্ষজনিত জ্বালা- যন্ত্রণা তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন। ক্ষুধা- ক্লিষ্ট অভাব অনটনের মধ্যে থাকা মানুষের জন্য তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।দেশ স্বাধীনের পরেও মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের দাবিতে- জমি, মজুরির লড়াইয়ে গরিব মানুষকে নিয়ে সংগ্রাম আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৫৬ সালে কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক হয়ে প্রথমে পটাশপুর থানার পালপাড়া সৎ সংঘ হাইস্কুলে শিক্ষকের চাকরিতে যোগদান করেন ।

তিনি সর্বদাই থেকেছেন অভাব, অনটন, অন্যায় অবিচার , জোতদার, জমিদারদের গরিব মানুষের উপর জুলুমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম- আন্দোলনে । কমিউনিস্ট মতাদর্শে তিনি আপ্লুত হয়ে তিনি কমিউনিস্ট পার্টিতে গোপনে কাজ শুরু করেন । ১৯৬৬ সালে তিনি খেজুরি থানার হলুদবাড়ি হাইস্কুলে শিক্ষকতার কাজে যুক্ত হন । ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহণ করেন । ১৯৭৮ সাল থেকে এক নাগাড়ে ২০ বছর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হয়ে মানুষের কাজ করে গেছেন নিরলসভাবে। খেজুরি থানায় দুটি সমিতি গঠিত হওয়ার পরে তিনি খেজুরি -১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদে থেকে যান। বিভিন্ন সভা সমিতিতে বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি অসাধারণ ভাগ্নিতার পরিচয় দিয়েছেন। সাহিত্য, কবিতা রচনাবলীতে তিনি অসাধারণ ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। বিদ্যালয় শিক্ষার সাথে সাথে পার্টি শিক্ষার কাজও তিনি চালিয়ে যেতেন। সকলের কাছে তিনি মাস্টার মশাই নামে পরিচিত ছিলেন।

১৯৭৭ সালে তিনি পার্টি সদস্য লাভ করেন। কাঁথি মহকুমা লোকাল কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার পর সর্বপ্রথম ১৯৮২ সালে খেজুরি থানা কমিটির গড়ে উঠলে , তিনি তার প্রথম সদস্য হয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি হেঁড়িয়া লোকাল কমিটির সম্পাদক ও খেজুরি - ভূপতিনগর (ভগবানপুর-২) যুক্ত জোনাল কমিটির সদস্য ছিলেন। তাঁর মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সারা খেজুরী থানা সহ জেলায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

জেলা কমিটির সদস্য যাদবেন্দ্রনাথ সাহু, সমীরেন্দ্রনাথ কলা, খেজুরি -১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক গোকুল চন্দ্র ঘোড়ই, দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা সুনীল শীট ,নিরাপদ দাস, খেজুরি ২ এরিয়া কমিটির সম্পাদক রত্নেশ্বর দোলুই, অতুল্য উকিল সহ পার্টির সর্বস্তরে নেতা কর্মীরা তাঁর বাড়িতে উপস্থিত হয়ে মাল্য দানের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। রাজ্য কমিটির ও জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য হিমাংশু দাস এবং সেক জাহারাজ আলী,অনাদি দাস তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এবং তাঁর বাড়িতে উপস্থিত থেকে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেছেন ।


Comments


bottom of page